মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে রিয়ালকে গুঁড়িয়ে দিলো বার্সেলোনা
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
২৭-১০-২০২৪ ১১:৫৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
২৭-১০-২০২৪ ০১:৪০:১১ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে মৌসুমের প্রথম ক্লাসিকোর উত্তাপ ছড়ানো লড়াইয়ে ৪-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা।
শনিবার (২৭ অক্টোবর) রাতে গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর জোড়া গোল করেন রবের্ত লেভানদোভস্কি। একটি করে গোল লামিনে ইয়ামাল ও রাফিনিয়ার।
চলতি মৌসুমে লিগে এখন পর্যন্ত দলের ৩৭ গোলের ২৫টিই করলেন এই তিন জন মিলে।
সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ক্লাসিকোয় গোলের কীর্তিও গড়লেন ইয়ামাল (১৭ বছর ১০৬ দিন)।
এই হারে লা লিগায় রেয়ালের টানা ৪২ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রায় ছেদ পড়ল। লিগে সবশেষ তারা হেরেছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে, আতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠে ৩-১ গোলে।
আর বার্সেলোনা স্পেনের শীর্ষ লিগে টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিজেদের কাছেই রাখল। এর্নেস্তো ভালভের্দের কোচিংয়ে ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত টানা ৪৩ ম্যাচ অপরাজিত ছিল তারা।
বের্নাবেউয়েই গত মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও, দ্বিতীয়ার্ধে ভিনিসিউস জুনিয়রের হ্যাটট্রিকে ৫-২ ব্যবধানের দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছিল রেয়াল। সেই আঙিনায় এবার বড্ড অচেনা হয়ে রইল কার্লো আনচেলত্তির দল।
অন্যদিকে, পরপর দুটি বড় পরীক্ষায় দারুণভাবে উতরে গেল ফ্লিকের হাত ধরে বদলে যাওয়া বার্সেলোনা। গত বুধবার রাফিনিয়ার হ্যাটট্রিকে বায়ার্ন মিউনিখকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দলটির বিপক্ষে প্রায় এক দশক পর জয়ের স্বাদ পায় কাতালান দলটি।
তাদের জয়-খরা কাটল এবার ক্লাসিকোতেও। আগের চার দেখায় সবকটিতে জিতেছিল রেয়াল।
এবার ঘরের মাঠে পজেশনে পিছিয়ে থাকা রেয়াল গোলের জন্য ৯টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে ৪টি। বার্সেলোনার ১৫ শটের ৭টি ছিল লক্ষ্যে।
দ্বিতীয় মিনিটে সুযোগ পেয়ে যান এমবাপে। ওয়ান-অন-ওয়ানে বাইরে মেরে বসেন তিনি। যদিও অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি।ত্রয়োদশ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ পান ইয়ামাল। মাঝমাঠ থেকে লেভানদোভস্কির ফ্লিকে বাড়ানো বল ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি, কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নেন স্প্যানিশ উইঙ্গার।
পঞ্চদশ মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে এমবাপে পাস দেন দূরের পোস্টে, জুড বেলিংহ্যামের স্লাইড অবিশ্বাস্যভাবে গোললাইন থেকে এক হাতে ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক ইনিয়াকি পেনিয়া। অবশ্য অফসাইডের পতাকা ওঠে এবারও।
বায়ার্ন ম্যাচের মতো এদিনও ‘হাই-লাইন’ ডিফেন্সের কৌশল বেছে নেয় বার্সেলোনা। এতে বারবার অফসাইডের ফাঁদে পড়েন রেয়ালের খেলোয়াড়রা, প্রথম ২০ মিনিটে ৫ বার!
২২তম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ডিফেন্ডার পাউ কুবার্সির বাধা এড়িয়ে বাইরে মেরে সুযোগ হারান ভিনিসিউস। ছয় মিনিট পর পেদ্রির জোরাল শট ঠেকান রেয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন।
৩২তম মিনিটে লুকাস ভাসকেসের থ্রু বল বক্সে ঢুকে জালে পাঠিয়ে উল্লাসে মাতেন এমবাপে। একটু পরই উবে যায় সেই আনন্দ, ভিএআরের সাহায্যে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি।
এ কারণেই প্রথমার্ধে গোলের জন্য রেয়ালের শট ছিল কেবল একটি, সেটিও লক্ষ্যভ্রষ্ট। এই সময়ে বার্সেলোনার ৬ শটের ২টি লক্ষ্যে ছিল।
২০১৩ সালের মার্চের পর প্রথমবার লা লিগার কোনো ম্যাচে প্রথমার্ধে ৮ বার অফসাইডের শিকার হলো রেয়াল।
৫৪ থেকে ৫৬, দুই মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল করে বার্সেলোনাকে চালকের আসনে বসিয়ে দেন লেভানদোভস্কি।
প্রথমটিতে অবদান রাখেন মার্ক কাসাদো। মাঝমাঠ থেকে তার বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের বাইরে থেকে নিচু শটে জালে পাঠান লেভানদোভস্কি। এরপর আলেহান্দ্রো বাল্দের ক্রসে বক্সে লাফিয়ে হেডে দ্বিতীয় গোলটি করেন ৩৬ বছর বয়সী তারকা।
এবারের আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা লেভানদোভস্কির গোল হলো ১১ ম্যাচে ১৪টি। ৬টির বেশি নেই আর কারও।
৬৪তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন এমবাপে। ভিনিসিউসের পাসে ফরাসি তারকার সামনে একমাত্র বাধা ছিল গোলরক্ষক, তার প্রচেষ্টা এগিয়ে এসে রুখে দেন পেনিয়া। পরের মিনিটে এমবাপে ফের জালে বল পাঠালেও অফসাইডের কারণে গোল মেলেনি এবারও।
পরের মিনিটে অপরপ্রান্তে হ্যাটট্রিক হয়ে যেতে পারত লেভানদোভস্কির। বক্সে ঢুকে রাফিনিয়া বল দেন ফাঁকায় থাকা সতীর্থকে। এ যাত্রায় ভাগ্য সহায় ছিল না, পোস্টে মারেন সাবেক বায়ার্ন স্ট্রাইকার। দুই মিনিট পর তিনি আরেকটি সুযোগ হারান ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে উড়িয়ে মেরে।
৭১তম মিনিটে গোলরক্ষক বরাবর মেরে আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেন বিশ্বকাপ জয়ী তারকা এমবাপে।
ছয় মিনিট পর চমৎকার গোলে রেয়ালের ঘুরে দাঁড়ানোর পথ আরও কঠিন করে ফেলেন ইয়ামাল। রাফিনিয়ার পাস বক্সে পেয়ে ডান পায়ের জোরাল শটে কাছের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।
আর ৮৪তম মিনিটে রেয়ালের কফিনে চতুর্থ পেরেক ঠুকে দেন রাফিনিয়া। ইনিগো মার্তিনেসের পাস ধরে সঙ্গে লেগে থাকা প্রতিপক্ষের একজনকে ছিটকে ফেলে, বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলরক্ষককে ফাঁকি দেন ২৭ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। গোটা বের্নাবেউয়ে তখন রাজ্যের হতাশা।
১১ ম্যাচে ১০ জয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট হলো ৩০। সমান ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে গতবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল।
বাংলা স্কুপ/ডেস্ক/এইচ বাশার/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স